How to Stay Fit on Eid Occassion:Part 1:Food Habit for Eid-ul-Fitr ঈদ এর মৌসুমে কিভাবে সুস্থ্য থাকা যায় :পর্ব ১:ঈদ এর খাদ্যাভ্যাস

সামনে আসছে খুশির ঈদ | সবার বাসাতেই কম বেশি ভালো খাবার রান্না বান্না হয় | কারো কারো  আবার অনেক অনেক দাওয়াত  খাওয়া  হয় | অনেকে চিন্তায় থাকেন যে এত শাহী খাবার বেশি খেলে ওজন বেড়ে যাবে , অসুস্থ্য হবেন ইত্যাদি | ঈদ এর সময় অনেকে লব্মা ছুটি পান, তেমন কোনো কাজ কর্ম থাকে না | তার উপর আবার এত ভালো খাওয়া দাওয়া– ওজন তো বাড়বেই | কিন্তু আপনি একটু যদি সচেতন হন তাহলে ওজন বাড়বে না এবং সুস্থ্য  ও থাকা যাবে | ওজন বাড়ানো যেমন সোজা, ওজন কমানো কিন্তু তার চেয়ে অনেক অনেক কঠিন |এই কঠিন কাজ করার চাইতে একটু সচেতন হয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাই ঠিক নয় কি?

ঈদ এর স্বাস্থ্য টিপস: কি ভাবে খাবেন ?

  • সারা মাস রোজা রেখে অনেক কষ্ট করেছেন | অনেক সংযম অভ্যাস করেছেন, কম খেয়েছেন | ঈদ এ তাই অবশ্যই খাবেন | বাড়িতে মজার মজার রান্না তো হবেই | কষ্ট করে রান্না করা সেসব মজার খাবার থেকে কেন নিজেকে বঞ্চিত করবেন? কিন্তু খাবেন পরিমিত পরিমানে, ক্যালরি মেপে এবং আপনার শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী | একবারে  বেশি   খেলে সেটা হজম না হয়ে আপনার শরীরে চর্বি হয়ে জমা হবে | ফলে ওজন বাড়বে | তাই বারে বারে খাবেন, কম ক্যালরি যুক্ত খাবার |
  • কখনোই খুব বেশি ক্ষুধার্ত  অবস্থায় থাকবেন না | বারে বারে খেলে কম খাওয়া হবে, বেশি ক্ষুধার্ত হয়ে খেলে বেশি খাওয়া হবে |
  • একবারে বেশি না খেয়ে portion control করুন, একটু ক্ষুধা রেখে খান | তারপর দুই থেকে তিন ঘন্টা পরে আবার খান |
  • বারে বারে কিন্তু পোলাও কোর্মা খাবেন না | অথবা বেশি গুরুপাক বা শাহী খাবার  খাবেন না | যেমন: সকালে যদি সাধারণ নাস্তা খান, দুপুরে  রিচ ফুড খেলেন অল্প , বিকালে আবার কম খেলেন, যেমন: চা,বিস্কিট, ফল ইত্যাদি | রাতে কিন্তু কম খাবেন, যেমন: ভাতের  বদলে রুটি,সবজি বা সবজির সুপ ও মাছ ইত্যাদি | এভাবে খাবার গুলো ব্যালান্স করবেন |
  • সকালের নাস্তা, সকালে ও বিকালে দুইবেলা হালকা খাবার.  দুপুরের খাবার, রাতের খাবার সবই ঠিক মত খাবেন |
  • প্রতিদিন রিচ ফুড খাবেন না,  ঈদ এর দিন বা তারপর দিন খেলেন, তারপরের দিন না খাওয়াই ভালো |
  • যদি সুস্থ্য থাকতে চান, তাহলে কোন খাবার টা খাবেন আর কোনটা খাবেন না তা আপনাকেই বেছে নিতে হবে | প্রতিদিন যেহেতু সব গ্রুপের খাবার — শর্করা, আমিষ, ভিটামিন, ফ্যাট, মিনারেল , দুধ ইত্যাদি আমাদের দরকার ,তাই খাবার টা সেভাবেই বুঝে শুনে খান |
  • তেলে ভাজা, বেশি তেল মশলা দিয়ে রান্না করা গুরুপাক খাবার , মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলুন , এতে বদহজম তো হবেই, রোজ রোজ খেলে ওজন বেড়ে, ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে |
  • কাবাব , গ্রিল করা খাবার , সালাদ, ফল,রুটি ইত্যাদি রাখবেন আপনার খাবারের মেনুতে |সালাদ, ফল, সবজি খেয়ে পেট ভরান |
  • গুরুপাক খাবারের সাথে প্রচুর সালাদ ও সবজি খান|
  • আপনার বাড়িতে যিনি রান্না করেন, উনাকে বলুন তেলে ভাজা, বেশি তেল ও মশলা যুক্ত খাবার না রাধতে |
  • দাওয়াতে গেলে বেশি বেশি  খাবেন না, একবার নিন, দুই বার নিবেন না| বেশি চাপা চাপি করলে ভদ্র ভাবে না বলুন এবং ভাত জাতীয় খবর কম খান | মিষ্টি খাবার না খেয়ে ফল খেতে পারেন| অল্প পরিমানে মিষ্টি খেতে পারেন | দাওয়াতে গেলে খাবার দিকে মনোযোগ না দিয়ে গল্প করা ও সবার সাথে কুশল বিনিময় করার দিকে মনোযোগ দিন | খেতে খেতে মরে যাব বা খাওয়ার জন্য দাওয়াত এ যাব এই চিন্তা যেন মনে  না আসে |
  • খাওয়ার পরে টক দই খেলে ভালো হজম হয়, বোরহানিও  হজমে সহায়ক |এছাড়া পুদিনা লাছিও হজমের জন্য খুব ভালো একটি পানীয়|
  • পানীয় হিসাবে কোমল পানীয় না খেয়ে ডাবের পানি, বোরহানি, লেবুর শরবত খান |
  • লেবু চর্বি দূর করার জন্য খুব ই ভালো কাজ করে | সকালে উঠে হালকা গরম পানিতে একটু লেবু চিপে খেলে সারাদিন সেটা আপনাকে চর্বি  দূর করতে  সাহায্য  করবে |লেবু মধু পানীয় ও একই কাজ করবে|
  • এছাড়া, লেবু চা, লেবু দিয়ে সবুজ চা খেলে, তা মেটাবলিসম বাড়িয়ে খাবার হজমে সহায়ক হবে| তবে চা খাবেন খাবার খাওয়ার এক ঘন্টা পরে|
  • লাগাতার দাওয়াত থাকলে যেই বেলা দাওয়াত থাকবে না, সেই বেলা অন্য রকম খান: রুটি, সবজি বা সবজির সুপ,সালাদ, মাছ ইত্যাদি | এতে আপনার খাওয়া দাওয়া র সমতা বজায় থাকবে, সারাদিনে খুব বেশি ক্যালরি খাওয়া হবে না, বদহজম হবে না |
  • দাওয়াত এ যাবার আগে বাসা থেকে হালকা খাবার খেয়ে নিন, যেমন: ফল বা সালাদ, পানি| তাহলে আর বেশি খেতে ইচ্ছা করবে না
  • পর পর অনেক বাসায় বেড়াতে গেলে সব বাসায় এক চামচ করে  খান বা খুব অল্প পরিমানে খান | কম ক্যালরি যুক্ত খাবার বা ফল খান |
  • আরেকটি ভালো উপায় হচ্ছে পানি | পানির অনেক গুন: পানি হজমে সহায়ক, যেকোনো খাবারই বেশি পানি তে হজম হয়ে যাবে | গুরুপাক খাবার খেলে তাই অনেক অনেক পানি খাবেন, খারাপ লাগবে না | বেশি বেশি পানি আপনার  ত্বকের জন্যও ভালো | ঈদ এর তিন দিন আগে থেকে অনেক পানি খান, ঈদ এর মৌসুমে আপনেক অনেক সজীব দেখাবে | কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি বাড়িয়ে ১২/১৪ গ্লাস করুন |  খাওয়ার আগে পানি খেয়ে নিন , দেখবেন আর বেশি খেতে ইচ্ছা করবে না |
  • রাতে কিন্তু ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ খেতে ভুলবেন না | তবে যেদিন অন্যবেলা দুধ জাতীয় খাবার, যেমন: ফিরনি,পায়েশ, পুডিং ইত্যাদি খাবেন, সেদিন রাতে আর দুধ না খেলেও চলবে|
  • আর রাতের খাবার অবশ্যই ঘুমানোর তিন ঘন্টা আগে খাবেন এবং খাবার খেয়েই শুয়ে পড়বেন না|©ফিটনেস বাংলাদেশ-fitnessbd.com

    ঈদ এর সময় যাতে ওজন না বাড়ে বা সুস্থ্য থাকা যায়, সে জন্য আপনাকেই সচেতন হতে হবে | আপনার স্বাস্থ্য আপনার ই হাতে | নিজেকে বোঝান আপনি কি বেশি খেয়ে ওজন বাড়াবেন? নাকি কম খেয়ে স্লিম, সুস্থ্য থাকবেন |যারা ওজন বাড়াতে  চান, তাদের জন্য তো ঈদ মজার সময় | কিন্তু অতিরিক্ত বেশি খেয়ে  পেট এর সমস্যা করবেন না | রাসুলুল্লাহ (স:) এর শিক্ষা কিন্তু পরিমিত খাওয়া | কিন্তু আমরা কি তা মেনে চলি?

আপনার আর কোনো প্রশ্ন থাকলে জানাবেন | কেমন লাগলো আমার এই লেখা তাও জানাতে ভুলবেন না |

আগামী প্রকাশনা : ঈদ এর শরীরচর্চা

Image by: karenandbrademerson

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s